আদালতের রায়ে শিক্ষকের ১ লক্ষ টাকা জরিমানা, ছাত্রীকে দিয়েছিলেন এমন শাস্তি

According to the court's verdict, the teacher was fined 1 lakh rupees

1/8: এক দশক আগেও আজকের থেকে অনেকটাই আলাদা ছবি ছিল দেশের স্কুলগুলোয়। প্রায় প্রতিটা স্কুলেই কয়েকজন করে শিক্ষক থাকতেন যাদের দেখলে ভয়, সম্ভ্রমে যাবতীয় দুষ্টুমি থেমে যেত ছাত্র-ছাত্রীদের। ক্লাস রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি বা সহপাঠীর সঙ্গে মারামারি করলে লম্বা বেত বা ছড়ি হাতে সেই রাশভারি স্যারকে আসতে দেখলে মুহূর্তের মধ্যে ফাঁকা হয়ে যেত স্কুলের লন।

2/8: হঠাৎ দেখা যেত কোন‌ও এক জাদুবলে সব পড়ুয়া ক্লাসের বেঞ্চে বসে বই খুলে পড়া মুখস্ত করতে শুরু করেছে! স্কুলের পড়া না করে এলে বা চুলে অতিরিক্ত স্টাইলিশ হেয়ারকাট অথবা অন্য কোনও নিয়ম-শৃঙ্খলা ভাঙলে শাস্তি যে অবধারিত ছিল তা ছেলেমেয়েরা সকলেই জানত। তা যে সবসময় বেত্রাঘাত বা মার হত তা নয়। অনেক সময় কান ধরে সর্বসমক্ষে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হত। কখনও আবার স্কুলের ছাত্রীদের সামনে অবাধ্য ছাত্রকে নীল ডাউন করিয়ে রাখতেন শিক্ষক। আর কান ধরে উঠবোস তো আছেই।

According to the court's verdict, the teacher was fined 1 lakh rupees

3/8: অতীতে স্কুলের এই ছবি নিয়ে অনেকেই আজকাল নস্টালজিক হয়ে পড়েন। তখন অন্যায় করলে শিক্ষক শাসন যেমন করতেন তেমনই ছাত্রছাত্রীদের তাঁরা স্নেহ‌ও করতেন। সব মিলিয়ে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক অদ্ভুত এক বন্ধনে আবদ্ধ ছিল। তবে এর মধ্যে কি কোনও অন্যরকম ঘটনা ঘটত না? নিশ্চয়ই ঘটত। বেশ কিছু ক্ষেত্রে শাসন করার সময় মাত্রাজ্ঞান ছাড়িয়ে যেতেন মুষ্টিমেয় কয়েকজন শিক্ষক। তাঁদের অত্যাচারে ছাত্রছাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে, মর্মান্তিকভাবে দু-একজনের মৃত্যু‌ও ঘটেছে। কিন্তু এসবই বিচ্ছিন্ন বিষয়।

4/8: যদিও এই বিচ্ছিন্ন বিষয়গুলোকে মুখ্য ধরে নিয়ে এবং শিক্ষাবিদ ও মনস্তত্ত্ববিদদের একাংশের পরামর্শে সংসদে আইন করে ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে মারধর বা শাস্তি প্রদানের বিষয়টি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন শিক্ষকতার শুরুতেই পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়, কোন‌ও ছাত্র-ছাত্রী ক্লাসে বা স্কুলে যত দুষ্টুমি করুক না কেন তার গায়ে হাত দেওয়া চলবে না। সে পড়া না পারলে অভিভাবককে ডেকে পাঠানো বা অন্য কোনও পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু কান ধরে উঠবোস করানো বা স্কেল দিয়ে মারা, কোনরকম মানসিক বা শারীরিক শাস্তি প্রদান চলবে না।

5/8: শিক্ষকদের কাছ থেকে ছাত্রছাত্রীদের শাস্তি দেওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া নিয়ে অভিভাবকদের একটা বড় অংশ যথেষ্ট খুশি। উল্টে নিয়ম লঙ্ঘন করে কোন‌ও শিক্ষক যদি ক্লাসে ছাত্রছাত্রীদের কান ধরে স্রেফ দাঁড় করিয়ে দেন তাতেও তাঁরা ফুঁসে ওঠেন। তবে অভিভাবকদেরই আরেকটি অংশ গোটা বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। তাঁরা বুঝতে পারছেন, স্কুলে শিক্ষকরা শাসন করতে না পারায় ছেলেমেয়েদের মধ্যে ছোট থেকে নিয়ম-শৃঙ্খলার বোধ গড়ে উঠছে না। তারা গোড়া থেকেই যেন ভুল পথে চলতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে অনেকে মন দিয়ে পড়াশোনাও করছে না।

6/8: এই অবস্থায় বোম্বে হাইকোর্টের গোয়া ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে স্কুলের শিক্ষকদের শাস্তি দেওয়ার অধিকার আবার ফিরতে চলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

7/8: ২০১৪ সালের ঘটনা। গোয়ার এক প্রাথমিক স্কুলের পাঁচ বছরের ছাত্রী জল খাওয়ার নাম করে ফাঁকিবাজির চেষ্টা করে। তাকে শিক্ষক কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকার শাস্তি দিলে ওই একই স্কুলে পড়া বছর আটেকের তার দিদি এসে বিষয়টির প্রতিবাদ জানায়। তখন শিক্ষক দুই বোনকেই একসঙ্গে কান ধরে দাঁড় করিয়ে দেন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ওই দুই ছাত্রীর মা-বাবা। সেই মামলায় নিম্ন আদালত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে রায় দেয়। জানায় তিনি আইন না মেনে অপরাধ করেছেন। এর জন্য এক লক্ষ টাকা জরিমানা ও একদিন হাজত বাস করতে হবে। নিম্ন আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ওই শিক্ষক হাইকোর্টে অ্যাপিল করেন। 

7/8: সম্প্রতি বোম্বে হাইকোর্টের গোয়া ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার রায় দিয়েছে। বিচারক নিম্ন আদালতের রায় খারিজ করে দিয়েছেন। জানিয়েছেন ওই দুই ছাত্রীকে শাস্তি দিয়ে শিক্ষক কোন‌ও ভুল করেননি। কারণ স্কুলে ছেলেমেয়েরা শুধু পড়াশোনা করতে আসে না, নিয়ম-শৃঙ্খলাও শেখে। সেখানে একজন শিক্ষকের প্রয়োজন অনুযায়ী শাসন করার অবশ্যই অধিকার আছে। গোয়া হাইকোর্টের এই রায়ের পর প্রশ্ন উঠছে তবে কি আবার শিক্ষকরা শাসনের অধিকার ফিরে পেতে চলেছেন? এর উত্তর দেবে সময়।

বি:দ্র: প্রতিদিন নতুন কোনো চাকরি এবং কাজের আপডেট সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আপডেট মিস করতে না চাইলে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হয়ে থাকুন। 

Join Kajkarmo Telegram.jpeg

🔥 গুরুত্বপূর্ণ লিংক:  👇👇👇👇

কাজকর্ম WhatsApp গ্রুপ Join Now
✅ Telegram Channel Join Now

আরো আপডেট-Click Here