এক যুগেরও বেশি সময়। ১৪ বছর অপেক্ষা করার পর অবশেষে সরকারি স্কুল শিক্ষকের চাকরি পেতে চলেছেন ওঁরা! আজ থেকে ১৪ বছর আগে ২০০৯ সালে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বেরিয়েছিল। সরকারি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগের সেই বিজ্ঞপ্তি দেখে উপযুক্তরা আবেদনও করেন।
আবেদন শেষে প্যানেলও বেরিয়ে যায়। কিন্তু চাকরির অ্যাপোয়েন্টমেন্ট লেটার আর বাড়ি এসে পৌঁছয়নি ১,৫০৬ জন চাকরিপ্রার্থীর কাছে। ফলে হকের চাকরি পাওয়ার জন্য গত ১৪ বছর ধরে আদালতের পাশাপাশি রাস্তায় নেমে তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছে।
১৪ বছরের অপেক্ষার অবসান
এই দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে এল সুখবর। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ১৪ বছর অপেক্ষার পর প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পেতে চলেছেষ দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১,৫০৬ জন চাকরিপ্রার্থী।
বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে বিতর্কের শেষ নেই। তবে দেড় হাজারের বেশি যে চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগের জন্য কলকাতা হাইকোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হল তাদের নিয়ে বিতর্কের জন্ম আগের বামফ্রন্ট সরকারের আমলে।
২০০৯ সালের প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
২০০৯ সালে রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলগুলোয় শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বেরোয়। সেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে যথাযথভাবে আবেদন করলে এবং প্যানেলে নাম ওঠা সত্বেও দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই ১,৫০৬ জনকে শেষ পর্যন্ত নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এই নিয়ে আদালতে মামলা করেন ওই চাকরিপ্রার্থীরা।
তবে এই নিয়োগ বিতর্ক আরও পেকে ওঠে বর্তমান তৃণমূল সরকারের আমলে। গত বছর হাইকোর্টের নির্দেশে ইন্টারভিউ ছাড়াই এই চাকরিপ্রার্থীদের প্যানেল ঘোষণা করা হয়।
পুরোনো নিয়মেই প্রাইমারিতে এই নিয়োগ
সেই পুরানো বিজ্ঞপ্তিতেই এই চাকরি বলে ইন্টারভিউ বা লিখিত পরীক্ষা ছাড়াই নিয়োগের প্যানেল তৈরি করা হয়। কিন্তু আশ্চর্যজনক বিষয় হল হাইকোর্টের নির্দেশে প্যানেল বেরোলেও এই চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি। তাই বিষয়টি নিয়ে তাঁরা ফের কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
উল্লেখ্য ২০০১ সালের শিক্ষক নিয়োগ বিধি অনুযায়ী ২০০৯ সালে এই চাকরির বিজ্ঞপ্তি বেরিয়েছিল। সেই সময় আবেদনকারীদের অ্যাকাডেমিক স্কোরের ভিত্তিতে প্যানেল তৈরি হত। ইন্টারভিউ নেওয়ার ব্যবস্থা ছিল না।
৩০ অগস্টের মধ্যেই নিয়োগ
গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা ও বিচারপতি কৃষ্ণা রাওয়ের ডিভিশন বেঞ্চ অবিলম্বে এই ১,৫০৬ জন চাকরিপ্রার্থীকে নিযুক্ত করার নির্দেশ দেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। এই চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ করার জন্য ৩০ অগস্ট পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে হাইকোর্ট।
এইদিকে হাইকোর্টের ধমক খাওয়ার পরই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের মাধ্যমে ওই চাকরিপ্রার্থীদের কাছে জয়েনিং লেটার পাঠানো শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই ২০০ জনেরও বেশি চাকরিপ্রার্থীর কাছে জয়নিং লেটার পৌঁছে গিয়েছে।
হাইকোর্টের কাছে নিয়োগের রিপোর্ট জমা প্রাইমারি পর্ষদের
বাকিদের কাছেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জয়েনিং লেটার পৌঁছে যাবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। শেষ পর্যন্ত এই নির্দেশ মানা হল কিনা সে বিষয়ে ৩০ অগস্ট দুপুর তিনটের সময় কলকাতা হাইকোর্টে এই বিষয়ে স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
গত ১৪ বছরে এই চাকরিপ্রার্থীদের অনেকেই আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন আর বুঝি সরকারি চাকরি পাওয়া হল না। কিন্তু আদালতের নির্দেশের রাতারাতি হাসি ফুটেছে ওই ১,৫০৬ জন চাকরিপ্রার্থীর মুখে। এদিকে জানা গিয়েছে তাঁদেরকে নিজের ব্লক বা মহকুমার মধ্যেই চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে।
বিঃদ্রঃ চাকরি এবং নতুন কোনো নিয়োগের আপডেট, কর্মসংস্থান আপডেট মিস করতে না চাইলে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জয়েন হয়ে যান।
🔥 এগুলিও পড়ুন 👇👇
👉 স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দপ্তরে CHO পদে চাকরি, শূন্যপদ 1500 টি
👉 প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ থেকে বাদ B.Ed পাশেরা
👉 পশ্চিমবঙ্গ পুলিশে নতুন গ্রুপ-C চাকরির আবেদন শুরু হল
👉 রাজ্যের বেসরকারি স্কুল গুলির জন্য নতুন নিয়ম আনল সরকার
👉 ফুড SI এর ফর্ম ফিলাপ কবে থেকে শুরু হচ্ছে?