প্রাথমিক শিক্ষক হওয়ার নিয়মে ফের বড় পরিবর্তন। এবার সর্বোচ্চ আদালত অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শিক্ষক হওয়ার সুযোগ অনেকটাই বেড়ে গেল ডিএলএড (D.El.Ed) বা ডিএড পাস চাকরিপ্রার্থীদের সামনে। তেমনই স্বপ্ন ভাঙল বিএড (B.Ed) পাস চাকরিপ্রার্থীদের। কারণ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এবার থেকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে না কোনও বিএড পাস চাকরিপ্রার্থী।
বিএড পাশেদের নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ঠিক কী রায় দিল?
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিএড পাশরা অংশ নিতে পারবে কি না তা নিয়ে বিতর্ক অনেকদিন ধরেই চলছিল। গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে নতুন করে রাজ্যে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ এবং টেট পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি জারি হয়।
সেই শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং টেট পরীক্ষায় বিএড পাশরা অংশ নিতে পারবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এই বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চে একটি মামলা হয়। তাতে বিচারপতি NCTE-এর সর্বভারতীয় নির্দেশিকা তুলে ধরে জানান, বিএড পাশরাও প্রাথমিক শিক্ষক হতে পারবেন।
কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশের পর ডিএলএড পাশ চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ সর্বোচ্চ আদালতে পাল্টা মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার অর্থাৎ ১১ অগস্ট সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলার রায় দিল। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতা হাইকোর্টের রায় খারিজ করে দেন।
তাঁরা পরিষ্কার জানান- পশ্চিমবঙ্গ সহ সারাদেশে প্রাথমিক শিক্ষকতা করতে হলে অবশ্যই ডিএলএড বা ডিএড এই দুটোর মধ্যে কোনও একটা ডিগ্রি থাকতেই হবে। বিএড পাশরা কোনোমতেই এক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র ছাড় বা সুযোগ পাবেন না।
সুপ্রিম কোর্টের এই রায় দিতে গিয়ে বিচারপতিরা জানিয়েছেন, কোনও B.Ed পাস যদি পাশাপাশি D.El.Ed কোর্সও করে থাকেন তবে তিনি প্রাথমিক শিক্ষক হতে পারবেন। সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ের ফলে পশ্চিমবঙ্গের চলতি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বড়সড় বদল আসতে চলেছে। কারণ যে সাড়ে ১১ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছিল তার ইন্টারভিউ পর্ব ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে। সেখানে বহু বিএড পাশ চাকরিপ্রার্থী ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের ফলে তাঁরা কেউ আর প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরির জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না।
সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ের ফলে বিএড পাশদের ক্ষেত্রে চাকরির পরিসর অনেকটাই সঙ্কুচিত হল। বর্তমানে তাঁরা কেবলমাত্র হাই স্কুলের অর্থাৎ নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ স্তরের শিক্ষকতা করার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তবে এই রায়ের ফলে ডিএলএড পাস চাকরিপ্রার্থীদের সুযোগ আবার অনেকটা বেড়ে গেল।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ফলে ২০২২-এর টেট পাশেদের কী হবে?
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রায়কে ভিত্তি করে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে যে টেট পরীক্ষার হয়েছিল তাতে বহু বিএড পাশ চাকরীপ্রার্থী অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের ফলে তাঁরা আর কেউ ওই চাকরির জন্য উপযুক্ত রইলেন না।
ফলে টেট পরীক্ষায় বিএড পাশ চাকরিপ্রার্থীরা পাশ করলেন না ফেল করলেন তার কোনও মূল্য আর নেই। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ফলে প্রাথমিক শিক্ষকতার দরজা B.Ed পাশ চাকরিপ্রার্থীদের জন্য চিরকালের মতো বন্ধ হয়ে গেল বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
বিঃদ্রঃ চাকরি এবং নতুন কোনো নিয়োগের আপডেট, কর্মসংস্থান আপডেট মিস করতে না চাইলে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জয়েন হয়ে যান।
🔥 এগুলিও পড়ুন 👇👇
👉 রাজ্যের বেসরকারি স্কুলগুলির জন্য নতুন! সব স্কুলকেই মানতে হবে
👉 ফুড SI এর ফর্ম ফিলাপ কবে থেকে শুরু হচ্ছে? গুরুত্বপূর্ণ আপডেটটি জানুন
👉 পশ্চিমবঙ্গ পুলিশে নতুন গ্রুপ-C চাকরির আবেদন শুরু হল
👉 BECIL এ অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে চাকরি, লিখিত পরীক্ষা ছাড়াই নিয়োগ