সেরা পেশাগুলোর মধ্যে ডাক্তারি যে অন্যতম এই নিয়ে বোধহয় কারো কোনও দ্বিমত নেই। একজন চিকিৎসক (Doctor) যেমন মোটা টাকা উপার্জন করেন, তেমনই তাঁর চেষ্টায় প্রাণে বাঁচেন রোগীরা। ভালো উপার্জন, সেইসঙ্গে মানুষের এইভাবে কাজে লাগা আর কোনও পেশার ক্ষেত্রে এত সহজে মিলেমিশে যায় কিনা সন্দেহ আছে।
দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার পর বর্তমানে সর্বভারতীয় এন্ট্রান্স টেস্ট (NEET) দিয়ে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়। আমরা হামেশাই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর দেখে থাকি একদল পড়ুয়া বলে, তারা ভবিষ্যতে চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করতে চায়। সেই সময় অনেকেই বলতে শুনি- তারা আগামী দিনের ডাক্তার হয়ে বিনামূল্যে মানুষের চিকিৎসা করবে।
সত্যিই অনেক চিকিৎসক অর্থ দেখেন না, বিনামূল্যে রোগীর সেবা করেন। কিন্তু প্রকাশ্যে যত জন বলেন তাঁরা ভবিষ্যতে বিনামূল্যে মানুষের সেবা করতে চান, শেষ পর্যন্ত ততজন কি বিনামূল্যে মানুষের চিকিৎসা করে থাকেন? বাস্তব অভিজ্ঞতাব বোধহয় আমাদের একটু অন্যরকমই উত্তর দেয়!
তা আজ চিকিৎসকদের অর্থের অর্থাৎ বেতনের কথা যখন উঠল তখন আরেকটি দিকে নজর দেওয়া যাক। চিকিৎসক হলে ভাল উপার্জন করা যায় এটা আমরা কম-বেশি জানি বা বলে থাকি। কিন্তু কতটা উপার্জন করা যায় এটা কজন জানেন? আজ বরং সেদিকেই একটু নজর দেওয়া যাক।
পশ্চিমবঙ্গের ডাক্তারদের মাসিক বেতন কত?
ইন্টার্নশিপ অবস্থায় ডাক্তারদের বেতন
চিকিৎসকের লাইসেন্স পাওয়ার পরই উপার্জন শুরু হয়, ব্যাপারটা কিন্তু তা নয়। ডাক্তারি পড়তে পড়তেই তাঁরা ভাল পরিমাণ বেতন বা ভাতা পেয়ে থাকেন। ডাক্তারির একেবারে প্রাথমিক ডিগ্রি, যাকে এমবিবিএস (MBBS) বলা হয় সেটা পড়াকালীনই পড়ুয়ারা পশ্চিমবঙ্গে মাসে প্রায় ২৮ হাজার টাকা ভাতা বা স্টাইপেন্ট পায়। একে ইন্টার্নশিপ স্টাইপেন্ড বলে। এমবিবিএস পাঠরত চিকিৎসকদের জুনিয়র ডাক্তার হিসেবে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে আউটডোর থেকে এমারজেন্সি ওয়ার্ডে নানান জায়গায় ডিউটি দিতে হয়। সরাসরি রোগী দেখে অভিজ্ঞতা অর্জনের মাধ্যমে পড়াশোনা সম্পূর্ণ করেন তাঁরা।
হাউস-স্টাফশিপ অবস্থায় ডাক্তারদের মাসিক বেতন
এমবিবিএস ডিগ্রি পাওয়ার অর্থ হল একজন বৈধ ডাক্তার হয়ে উঠলেন। এটা পাশ গ্রাজুয়েট হওয়ার মত বিষয়। এরপর কেউ কোনও বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হতে চাইলে, অর্থাৎ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের মত যেকোনও বিষয়ে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করতে চাইলে এমডি (MD) বা সমতুল অন্য ডিগ্রির পড়াশোনার জন্য ফের তাঁকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করতে হয়। এই সময়েও পড়াশোনার পাশাপাশি রোগী দেখতে হয় তাঁদের। একে বলে হাউস-স্টাফশিপ। এক্ষেত্রে ভাতা বা বেতনের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। এমডি বা সমতুল পড়াশোনা করাকালীন ডাক্তারি পড়ুয়ারা পশ্চিমবঙ্গে মাসে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা বেতন বা ভাতা পান।
RMO অবস্থায় ডাক্তারদের মাসিক বেতন
এর পরবর্তী পর্যায়ে তাঁরা চিকিৎসক হিসেবে সরকারি হাসপাতাল বা বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি শুরু করেন। এই পর্যায়ে প্রাথমিকভাবে একজন চিকিৎসক RMO বলে পরিচিত হন। তখন উপার্জন আর নির্দিষ্ট ছকে বাঁধা থাকে না। তবে একজন আরএমও প্রাথমিক পর্যায়ে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি হাসপাতাল বা বেসরকারি হাসপাতালে মাসে ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পান। তাঁর যত অভিজ্ঞতা বাড়ে ততই লাফিয়ে লাফিয়ে উপার্জন বাড়তে থাকে।
বেসরকারি ক্ষেত্রে একজনকে একসঙ্গে দুটো হাসপাতালের আরএমও হিসেবেও কাজ করতে দেখা যায়। সেক্ষেত্রে মাসিক উপার্জন প্রথমেই লাখ টাকার বেশি হয়ে যায়!
অভিজ্ঞ ও সুদক্ষ চিকিৎসক হিসেবে ডাক্তারদের মাসিক বেতন
এর পরবর্তী পর্যায়ে একজন চিকিৎসক কত বেতন পান বা উপার্জন করেন তার কোনও নির্দিষ্ট ছক নেই। তবে সরকারি হাসপাতালে ক্ষেত্রে তাও কিছু বাঁধা ধরা নিয়ম আছে। কারণ সেখানে নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো থাকে। একজন অভিজ্ঞ ও সুদক্ষ চিকিৎসক সরকারি হাসপাতালে চাকরি করলে সহজেই মাসে দু-তিন লক্ষ টাকা বেতন পান। তাঁরা সরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষক হয়ে গেলে সেই বেতন আরও অনেকটাই বেড়ে যায়। আর বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের বেতন বহু ক্ষেত্রেই আকাশছোঁয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। এক্ষেত্রে মূল বেতনের সঙ্গে জটিল অস্ত্রোপচারের নানান প্যাকেজের টাকা যোগ হয়ে থাকে।
আরো আপডেট: রাজ্যে প্রাইমারি শিক্ষকদের বেতন কত?
চেম্বার খুলে ডাক্তারদের মাসিক ইনকাম
এদিকে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক নন, আবার বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গেও সরাসরি যুক্ত না থেকেও বহু চিকিৎসক রোগীদের পরিষেবা দিয়ে থাকেন। তাঁরা প্রাইভেট চেম্বার করে নিয়মিত রোগী দেখেন। এক্ষেত্র বহু চিকিৎসক আছেন যারা দৈনিক ১০-২০ হাজার টাকা করে আয় করে থাকেন!
তবে এমন চিকিৎসকও পাওয়া যায় যারা মাসে ৩০-৫০ হাজার টাকার বেশি আয় করেন না আবার বোলপুরের সুশোভনবাবুর মত চিকিৎসকও পাওয়া যায় যারা রোগীর থেকে প্রায় কোনও অর্থ না নিয়েই দীর্ঘদিন পরিষেবা দিয়ে এসেছেন। তবে এই চিকিৎসকেরা সত্যিই বিরল।
বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে দেখা গিয়েছে, চিকিৎসার খরচ যত বাড়ছে তার সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে চিকিৎসকদের আয় বাড়ছে। এই নিয়ে বহু বিতর্ক আছে। তবে সেই বিতর্ক নিয়ে আজ আমরা আলোচনা করলাম না। বরং পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসকদের আয় কোন পর্যায়ে কেমন হয় সেটাই আজ তুলে ধরা হল।
বিঃদ্র: নতুন কোনো চাকরি ও কাজের আপডেট মিস করতে না চাইলে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ এবং টেলিগ্রাম চ্যানেলে যুক্ত হয়ে যান। নিচে যুক্ত (Join) হওয়ার লিংক দেওয়া রয়েছে ঐ লিংকে ক্লিক করলেই যুক্ত হয়ে যেতে পারবেন। ওখানেই সর্বপ্রথম আপডেট দেওয়া হয়। আর আপনি যদি অলরেডি যুক্ত হয়ে থাকেন এটি প্লিজ Ignore করুন।
Important Links: 👇👇
✅ কাজকর্ম WhatsApp গ্রুপে জয়েন হোন | Click Here |
✅ Telegram Channel | Join Now |
🔥 আরো চাকরির বেতন 👇👇
🎯 রাজ্যে প্যারা টিচারদের বেতন কত?
🎯 স্বপ্নের চাকরি IAS-এর বেতন কত?
🎯 রাজ্যের হাই স্কুলের শিক্ষকদের বেতন কত?