চাকরির বাজার এমনিতেই টালমাটাল। করোনার পর থেকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও মহামন্দার ভ্রুকুটি ধীরে ধীরে গভীর হচ্ছে। ফলে অনেকেই চাহিদা মতো বেতন পাচ্ছেন না। এই অবস্থায় বিদেশে বিপুল বেতন বৃদ্ধির চাকরির অফার পেলে তা হাতে চাঁদ পাওয়ার সমান হবে বৈকি। কিন্তু তেমনই চাকরির অফার গ্রহণ করে ভয়ঙ্কর বিপদে পড়ে গেলেন ভারতের প্রায় ১০০ জন আইটি প্রফেশনাল। মায়ানমারে নিয়ে গিয়ে তাঁদের আটকে রেখে জোর করে বেআইনি কাজ করানো হচ্ছে বলে খবর।
ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান চালানো হয়েছে। তারপরেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিদেশ মন্ত্রক দেশবাসীকে এই চাকরি চক্রের বিষয়ে সাবধান করে দিয়েছে। সেখান থেকেই জানা গিয়েছে, থাইল্যান্ডে মোটা বেতনের আইটি চাকরি এবং বিপুল সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার নাম করে এই প্রতারণার জাল পাতত বিদেশি প্রতারকরা। সেগুলো আসলে কোনও আইটি সংস্থাই নয়।
Foreign Fake Job in India
ঠিক কীভাবে হতো প্রতারণা?
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশের আইটি প্রফেশনালদের টার্গেট করত থাইল্যান্ড ও মায়ানমারে অবস্থিত এই প্রতারণা চক্র। তারা আসলে ভুয়ো ক্রিপ্টোরকারেন্সি এবং কল সেন্টার জালিয়াতির কাজ করে। এরা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভারতীয় আইটি প্রফেশনালদের টার্গেট করে তাদের থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক সহ সে দেশের বিভিন্ন জায়গায় লোভনীয় বেতনের চাকরির অফার দিত। অফারের কাগজপত্রও পাঠিয়ে দেওয়া হতো। যা দেখে এদেশের আইটি প্রফেশনালরা সহজেই বিশ্বাস করতেন।
এরপর যারা ঐ প্রতারণা চক্রের ফাঁদে পা দিতেন, তাঁদের বেআইনিভাবে ভিসা ছাড়াই থাইল্যান্ডের নাম করে মায়ানমারে নিয়ে যাওয়া হতো। ভিসা ছাড়া বিদেশের মাটিতে পা রাখা মানে আপনি এমনিতেই চূড়ান্ত বেআইনি কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। কিন্তু ভারতীয় আইটি কর্মীরা যতক্ষণে এই বিষয়টি বুঝতে পারতেন ততক্ষণে অনেকটাই দেরি হয়ে যেত।
এরপর তাদের মায়ানমারের বিপদসঙ্কুল মায়াওয়াদ্দি এলাকায় নিয়ে গিয়ে রাখা হতো। ভারতীয় আইটি কর্মীদের সেখানে কার্যত আটকে রেখে ক্রিপ্টোকারেন্সি জালিয়াতি ও কলসেন্টার জালিয়াতির কাজ করতে বাধ্য করা হতো বলে জানা গিয়েছে। এমনিতেই মায়ানমারের ওই এলাকায় স্থানীয় বিদ্রোহীদের কারণে প্রবেশ করা যথেষ্ট কঠিন। ফলে সেখান থেকে পালিয়ে আসাও এক প্রকার অসম্ভব।
এই জাল আন্তর্জাতিক চাকরি প্রতারণা চক্রের কথা জানতে পেরে সক্রিয় হয়ে ওঠে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। থাইল্যান্ড ও মায়ানমার প্রশাসনের সহায়তায় এই চাকরি প্রতারণা চক্রে ফেঁসে যাওয়া ৩২ জন ভারতীয় আইটি প্রফেশনালকে এখনও পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর আরও অন্তত ৬০ জন ভারতীয় মায়ানমারে প্রতারকদের খপ্পরে আটকে আছেন। তাদেরকেও উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে।
এই প্রতারকদের হাত থেকে বাঁচার উপায় কী?
ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পরিষ্কার বলেছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় অস্বাভাবিক বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়ে বিদেশে কোনও চাকরির অফার এলে তা নিয়ে অনেকবার ভাবতে হবে। যে সংস্থা পক্ষ থেকে চাকরির অফার দেওয়া হচ্ছে আদৌ তা সঠিক কিনা সেই বিষয়টি ক্রস চেক করে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশে ওই সংস্থার আদৌ কোনও কার্যকলাপ আছে কিনা সেটাও ভালো করে জেনে নেওয়া প্রয়োজন। সেই সঙ্গে থার্ড পার্টির মাধ্যমে চাকরির প্রস্তাব আসলে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফ থেকে।
👍 চাকরি ও কাজের আপডেট মিস না করতে চাইলে আমাদের ‘টেলিগ্রাম চ্যানেলে’ যুক্ত হয়ে যান
🔥 আরো আপডেট 👇👇
🎯 রাজ্যে কোন চাকরির জন্য কত টাকা দিতে হয়েছে?
🎯 স্টেট ব্যাংকে 1673 শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ
🎯 এই ৮ টি কারণে অনেকে চাকরি পাচ্ছে না!