নানান বিতর্কের মধ্যেই রাজ্যে টেট পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপ চলছে। এখনও বেশ কয়েকদিন হাতে সময় আছে। কিন্তু এরই মধ্যে পরীক্ষায় বসার আবেদনের নিরিখে রেকর্ড তৈরি হয়ে গিয়েছে।
২০১৭ সালের টেট পরীক্ষায় বসার জন্য যতজন আবেদন করেছিলেন ইতিমধ্যেই সেই সংখ্যাকে ছাপিয়ে গিয়েছে এবারের 2022 এর আবেদনকারীর সংখ্যা। শেষ পর্যন্ত মোট সংখ্যাটা অনেক বেশি হয়ে মাইলফলক তৈরি করবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অনুমান।
এবারের টেটে আজ পর্যন্ত কতজন আবেদন করলেন?
গত ১৪ অক্টোবর থেকে টেট পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপ শুরু হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে প্রথমে জানানো হয়েছিল আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ফর্ম ফিলাপ করা যাবে। পরে সময়সীমা আরও একদিন, অর্থাৎ ৪ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে পর্ষদ। প্রথম দিনেই, অর্থাৎ ১৪ অক্টোবর প্রায় দেড় হাজার পরীক্ষার্থী টেটের ফর্ম ফিলাপ করেছিলেন। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত হিসেব বলছে ৩ লক্ষেরও বেশি পরীক্ষার্থী ইতিমধ্যেই ফর্ম ফিলাপ করে ফেলেছে।
উল্লেখ্য ২০১৭ সালে টেট পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি বেরিয়েছিল। তার ভিত্তিতে ২০২১ এর ৩১ জানুয়ারি পরীক্ষা হয়। সেবার আড়াই লক্ষের আশেপাশে পরীক্ষার্থী টেট পরীক্ষা বসেছিলেন বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার ইতিমধ্যেই সেই সংখ্যা ছাপিয়ে গিয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অনুমান ১১ ডিসেম্বর যে টেট পরীক্ষা হতে চলেছে শেষ পর্যন্ত তাতে মোট আবেদনকারীর সংখ্যা ৭ লক্ষের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে। আর তা যদি সত্যি হয় তবে টেট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এক ধাপে প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি পাবে। ফলে পরীক্ষা আয়োজনের ক্ষেত্রে এক বিপুল কর্মযজ্ঞ সামলাতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে।
কেন সবাই টেট পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আবেদন করছে?
এবারের টেট পরীক্ষা দেওয়ার জন্য পরীক্ষার্থীদের এই উৎসাহ অনেককেই অবাক করেছে। বিশেষ করে দুর্নীতি, বেআইনি নিয়োগ, দিনের পর দিন টেট পাশদের আন্দোলনের যে ছবি সংবাদ মাধ্যমে উঠে এসেছে তাতে পরীক্ষার্থীরা বিরূপ হলে অবাক হওয়ার কিছু ছিল না।
যদিও কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যাবতীয় আশঙ্কা দূরে সরিয়ে রেখে আরও বিপুলভাবে পরীক্ষায় বসার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্যের চাকরি প্রার্থীরা। কিন্তু এর কারণ কী? প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে কথা বলে এক্ষেত্রে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমাদের নজরে এসেছে-
• টেট পাস না করলে আর কোনভাবেই সরকারি প্রাথমিক স্কুলে চাকরি করা সম্ভব নয়। এমনকি বহু নামকরা বেসরকারি স্কুলও টেট পাশদের প্রাধান্য দিচ্ছে। তাই বয়স নির্বিশেষে চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে টেটে বসার প্রবণতা বেড়েছে।
• এই প্রথম বিএড ও ডিএলএড পাঠরতরাও (যারা এখনও ডিগ্রি পায়নি) টেটে বসতে পারছেন। স্বাভাবিকভাবেই এই সুযোগ তারা কেউ হাতছাড়া করতে চাননি। তাই পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।
• প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ঘোষণা করেছে একবার টেট পাশ করলে সেই সার্টিফিকেট দেখিয়ে ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত যতবার খুশি চাকরির জন্য আবেদন করা যাবে। এই বিষয়টি জানার পর আরও বেশি বেশি করে পরীক্ষার্থীরা আবেদন করছেন বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
• আগে টেট পাশ করা অনেকে আবার প্রাপ্ত নম্বর বাড়িয়ে নেওয়ার জন্য এবারে পরীক্ষায় বসছেন বলে মনে করছেন পর্ষদ কর্তারা। সেই কারণেও আবেদনকারীর সংখ্যা বেশ কিছুটা বেড়েছে।
• সরকারি বা সরকার পোষিত প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পাওয়ার বয়স সর্বোচ্চ ৪০ বছর হলেও টেটে বসার কোনও বয়সসীমা ঠিক করে দেয়নি পর্ষদ। তাই বেশি বয়সী অনেকেই টেটে বসছেন।
• সর্বোপরি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ নানা বিতর্কে বিদ্ধ হলেও আজও পশ্চিমবঙ্গের চাকরিপ্রার্থীদের একটা বড় অংশ প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকের চাকরিকে পাখির চোখ রেখে এগিয়ে চলেছেন। তাই টেট পরীক্ষায় আবেদনকারীর সংখ্যা কমার বদলের বেড়ে গিয়েছে।
২০১৭ এর টেট পরীক্ষায় বসেছিলেন প্রায় আড়াই লক্ষ পরীক্ষার্থী। শেষ পর্যন্ত পাশ করেন ৯৮৯৬ জন। তবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ধারণা এবারের টেট পরীক্ষায় পাশের সংখ্যা অনেকটাই বাড়বে।
✅ কাজকর্ম Whatsapp গ্রুপে জয়েন হোন- Click Here
✅ Telegram Channel: Click Here
🔥 আরো গুরুত্বপূর্ণ আপডেট 👇👇
🎯 টেট পাশ সার্টিফিকেট এর মেয়াদ কতদিন থাকবে?
🎯টেট পরীক্ষার জন্য চাকরিরত শিক্ষকরাও আবেদন করছে!
🎯মাসিক ১৫ হাজার টাকা বেতনে মহিলাদের জন্য চাকরি
🎯প্রাইমারি টেটে জেনারেলদের জন্য বরাদ্দ মাত্র ৩,১৪১ টি শূন্যপদ