1/9: ডিএ (DA) নিয়ে সরাসরি সংঘাতের পথে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও রাজ্য সরকারের কর্মচারীরা। কেউ কাউকে একচুল জায়গা ছাড়তে রাজি নয়। রাজ্য সরকারি কর্মীরা যেমন কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-র দাবিতে এক প্রকার অনড় থেকে আন্দোলন শুরু করেছে, তেমনই রাজ্য সরকারও সেই আন্দোলনের জেরে রাজ্যের প্রশাসনিক কাজকর্মে কোনরকম ব্যাঘাত মেনে নিতে রাজি নয়। দরকারে কড়া হাতে এই আন্দোলন মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তার জন্য জারি করেছে একাধিক সরকারি বিজ্ঞপ্তি।
2/9: দীর্ঘদিন ধরে গোটা দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাদের কর্মীদের সবথেকে কম ডিএ দেয়। চলতি বাজেট পেশের আগে রাজ্যের সরকারি কর্মীরা মাত্র ৩% হারে ডিএ পেতেন। তবে বাজেটে অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য মার্চ মাস থেকে আরও ৩% হারে ডিএ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেন। অর্থাৎ মার্চ মাস থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মীরা ৬% হারে ডিএ পাবেন। এরপরেও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের থেকে রাজ্য সরকারি কর্মীরা ৩৫% কম ডিএ পাবেন। এই নিয়েই আন্দোলনে নেমেছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা।
3/9: আন্দোলনরত সরকারি কর্মীদের দাবি, মাত্র ৩% ডিএ ঘোষণা করে রাজ্য সরকার আসলে সরকারি কর্মীদের ‘ভিক্ষে’ দিতে চাইছে। তারা এই ‘ভিক্ষের দান’ না নিয়ে পুরোপুরি কেন্দ্রীয় হারে ডিএ বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন। এই দাবিতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় প্রশাসনিক দফতরে, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে, মিটিং-মিছিল করেছে ২৮ টি সরকারি কর্মচারী সংগঠনের যৌথ মঞ্চ।
4/9: এমনকি কলকাতায় শহিদ মিনারের তলদেশে সরকারি কর্মীদের একাংশ অনশন আন্দোলনে বসেছেন। এরই মাঝে গত শুক্রবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন সরকারি কর্মীরা। যদিও পুলিশ সরকারি কর্মীদের সেই মিছিল আটকে দেয়। তবে ২০ ও ২১ ফেব্রুয়ারি, অর্থাৎ সোম ও মঙ্গলবার দু’দিনের কর্ম বিরতির ডাক দিয়ে ডিএ ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে চূড়ান্ত সংঘাতের পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্দোলনরত সরকারি কর্মীরা।
5/9: এই কর্মবিরতি ঠেকাতে তথা সরকারি কর্মীদের আন্দোলন ভাঙতে শনিবার থেকেই কঠোর পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে রাজ্য সরকার। প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরের নির্দেশের শনিবারই একটি বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় অর্থ দফতরের পক্ষ থেকে। সেই নির্দেশিকায় সরকারি কর্মীদের আন্দোলনের কথা উল্লেখ করেই জানানো হয়েছে সোম ও মঙ্গলবার সকল সরকারি কর্মীকে অফিসে হাজির থাকতে হবে।
6/9: এই দু’দিন অফিসে না এলে ‘ব্রেক ইন সার্ভিস’ বা কর্মজীবনে ছেদ পড়বে বলে ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। বেতন কেটে নেওয়ার পাশাপাশি এই দু’দিন কর্মবিরতি আন্দোলনে অংশ নেওয়া সরকারি কর্মীদের শোকজ করারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এই আন্দোলন ঠেকাতে স্বশাসিত সরকারি সংস্থাগুলিকেও আসরে নামিয়েছে প্রশাসন। যেমন, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে মাধ্যমিকের আগে সোম-মঙ্গলবার কোনরকম কর্মবিরতি নেওয়া চলবে না। এমনকি আগাম ছুটি নিয়ে থাকলেও এই দু’দিন কর্মীদের কাজে আসতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে পর্ষদ।
7/9: সরকারের এই কড়া মনোভাবে ডিএ কর্মীদের কর্মবিরতি আন্দোলন কতটা সফল হবে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও কর্মচারী সংগঠনগুলির শীর্ষ নেতৃত্ব আন্দোলন বজায় রাখার সিদ্ধান্তে অনড়। তাঁরা কেউ সরকারের হুঁশিয়ার সামনে মাথা নত করবেন না বলে জানিয়েছেন। এমনকি এই বিষয়ে রাজ্যের অর্থ সচিব মনোজ পন্তকে পাল্টা আইনি নোটিশ ধরিয়েছে আন্দোলনরত সংগঠনগুলি।
8/9: এই পরিস্থিতিতে বিশিষ্ট আইনজীবী তথা রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, সরকার হুঁশিয়ারি দিলেও কর্মীদের কর্ম বিরতি আন্দোলন নিয়ে খুব কিছু করতে পারবে না। বড়জোর দু’দিনের বেতন কেটে নিতে পারে। কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার অধিকার আছে সরকারি কর্মীদের। আর এই অধিকার সংবিধান স্বীকৃত বলেও জানিয়েছেন তিনি।
9/9: সব মিলিয়ে ডিএ ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মীদের সংঘাত একেবারে তুঙ্গে উঠেছে। এখন দেখার, সরকারকে উচিৎ শিক্ষা দিতে কর্মীদের এই কর্মবিরতি আন্দোলন রাজ্যের সরকারি অফিস-কাছারি অচল করে দিতে সফল হয়, নাকি শেষ পর্যন্ত সরকারের কড়া মনোভাবের জয় হবে।
চাকরি এবং কাজের আপডেট সবার আগে পেতে এবং মিস করতে না চাইলে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ এবং টেলিগ্রামে জয়েন হয়ে যান।
✅ WHATSAPP GROUP: Click Here
✅ TELEGRAM GROUP: Click Here
🔥 আরো আপডেট- Click Here