দীর্ঘদিন পর রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ ও টেট পরীক্ষা হতে চলেছে। এই দুই প্রক্রিয়াই প্রায় পাশাপাশি চালাচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ফলে চাকরিপ্রার্থী থেকে শুরু করে পরীক্ষার্থী, সকলের মধ্যেই আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। দুই প্রক্রিয়ারই পৃথকভাবে ফর্ম ফিলাপের কাজ চলছে। কিন্তু আদৌ শিক্ষক নিয়োগের ইন্টারভিউ হবে তো? ১১ ডিসেম্বর টেট পরীক্ষার যে দিন ধার্য করা হয়েছে, সেদিন আদৌ পরীক্ষা হবে?
কেন এই প্রশ্ন উঠছে? যেভাবে আন্দোলনের পর আন্দোলন হচ্ছে এই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে, তাতে শেষপর্যন্ত কী হবে বলা কঠিন। বিশেষ করে আইনি জটিলতা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ছে। এর সঙ্গেই জড়িয়ে গিয়েছে টেট পরীক্ষা হওয়া-নাহওয়ার বিষয়টি।
২০১৪ এর টেট পাশদের সঙ্গে ২০১৭ এর টেট পাশদের দাবির লড়াই, আবার ২০২২ এ যারা টেট পরীক্ষায় বসবে তাদের পৃথক অবস্থান, সব মিলিয়ে জটিলতার শেষ নেই যেন।
প্রাইমারি টেটে কী কী বিষয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে?
২০১৪ এর টেট পাশ ‘নন ইনক্লুডেড’-দের দাবি ইন্টারভিউ ছাড়াই তাদের নিয়োগ করতে হবে। এই দাবির স্বপক্ষে তাদের যুক্তি, ২০১৬ ও ২০২০ সালে দু’দফায় তাদের মধ্য থেকে যখন প্রায় ৫৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করা হয় তখন বহু ভুয়ো, বেআইনি নিয়োগ হয়েছিল। যা সিবিআই তদন্ত ও আদালতের রায়ে মোটামুটি স্পষ্ট। এই নিয়োগ কেলেঙ্কারির জন্যই তারা বঞ্চিত হয়েছেন, নাহলে আগেই চাকরি পেয়ে যেতেন বলে ২০১৪ এর টেট পাশদের দাবি। তাই এবার তাদের সবাইকে সরাসরি নিয়োগের দাবি তুলেছেন তাঁরা।
ঘটনা হল, ২০১৪ এর টেট পাশ ‘নন ইনক্লুডেড’-দের এই যুক্তি ভুল নয়। সত্যিই দুর্নীতি ও সরকারেরনিয়ঝগ করতে ঢিলেমির করতে তাঁদের অনেকের বয়স ৪০ বছর পেরিয়ে গিয়েছে, অনেকেই এখনও চাকরি পাননি। এই ঘটনার দায় এড়ানো পর্ষদের পক্ষে কঠিন।
এদিকে ২০১৭ এর টেট পাশদের দাবি, তাদের সঙ্গে ২০১৪ এর টেট পাশদের কোনও বিরোধ নেই। পর্ষদই ইচ্ছে করে বিভাজন ঘটিয়ে সমস্যা তৈরি করতে চাইছে। ২০১৭ এর পাশ করা চাকরিপ্রার্থীদের বক্তব্য, আগের পাশ করা চাকরিপ্রার্থীরা যেমন দুর্নীতির কারণে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন, তেমনই তাঁরা ২০১৭ সালে টেট পাশ করলেও এখনও একবারও ইন্টারভিউয়ে বসার সুযোগ পাননি।
এই পরিস্থিতিতে মাত্র ১১ হাজার ৭৬৫ টি পদে শিক্ষক নিয়োগ হলে বহু যোগ্য চাকরিপ্রার্থী ফের বঞ্চিত হবেন বলে আশঙ্কা। একমাত্র পর্ষদ সব শূন্য পদে নিয়োগ করলে ও যোগ্য সকলকে চাকরি দিলে তবেই এই আন্দোলন যেমন থামবে, তেমনই আইনি ঝঞ্ঝাট মিটবে।
আন্দোলনকারীদের একাংশের দাবি, রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষকের প্রকৃত শূন্য পদ ১ লক্ষ ২০ হাজারের বেশি। সরকার চাইলেই টেট পাশ এবং ট্রেনিং থাকা সকলকে নিয়োগ করতে পারবে।
এদিকে, নতুন ২০২২ এ যে টেট পরীক্ষা হওয়ার কথা তাতে পাশ করলে সেই উত্তীর্ণদের ভবিষ্যৎ কী হবে তাই নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। যেখানে শূন্যপদ প্রায় নেই, সেখানে নতুন করে টেট পরীক্ষা নেওয়ার যৌক্তিকতাই খুঁজে পাচ্ছেন না অনেকে।
সবমিলিয়ে, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অতীতের দুর্নীতি ও অপরাধকে প্রশ্রয় দেওয়াটাই সব সমস্যার মূল হিসেবে উঠে আসছে।
✅ কাজকর্ম Whatsapp গ্রুপে জয়েন হোন- Click Here
👍চাকরি ও কাজের আপডেট মিস না করতে চাইলে আমাদের ‘টেলিগ্রাম চ্যানেলে’ যুক্ত হয়ে যান
🔥 আরো চাকরির আপডেট 👇👇
🎯 টেটের ফর্ম ফিলাপ করার সময় এই ভুলগুলো করবেন না
🎯 রাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিতেও অনিয়ম
🎯 নিজের রাজ্যেই টাকা ছাপানোর কাজে চাকরি