ভারতবর্ষে জাতপাতের বিভাজন রাজনীতিতেও আছে, আবার পড়াশোনা-কাজে কর্মেও। তবে বিভাজনের রাজনৈতিক অঙ্কেই পড়াশোনা-চাকরির সংরক্ষণের বিষয়টা যে নির্ধারিত হয় তা জানা কথা। হালে কর্নাটক সরকারের একটা সিদ্ধান্তে তা ফের প্রমাণিত হল। ফলে সে রাজ্যে পড়াশোনা ও চাকরির ক্ষত্রে সংরক্ষণের সীমা সুপ্রিম কোর্ট নির্ধারিত ৫০ শতাংশকে ছাপিয়ে গিয়েছে।
আপনার মনে হতে পারে এই সংরক্ষণের বিষয়টি কর্নাটকের তো আমি জেনে কি করবো। আপনাকে জানিয়ে রাখি এটি অন্য রাজ্যের বিষয় হলেও এমনটা আমাদের রাজ্যে বা ভারতের অন্য রাজ্যে এমন ঘটনা হতেই পারে। তাই আগে থেকেই এই বিষয়ে জানা থাকলে পরে আপনি অবাক হবেন না।
SC, ST সহ মোট সংরক্ষণ ৫০%
সম্প্রতি কর্নাটক সরকার এক সর্বদলীয় বৈঠক ডাকে। সেখানে জানায় রাজ্যের শিক্ষা ও সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে তফশিলি জাতি (SC) ও তফশিলি উপজাতিদের (ST) সংরক্ষণের উর্দ্ধসীমা বৃদ্ধি করা হবে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে দক্ষিণের রাজ্যটিতে তফশিলি জাতির সংরক্ষণের সীমা ১৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৭ শতাংশ হয়েছে। আর তফশিলি উপজাতিদের ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধির পরিমাণ ৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭ শতাংশ হয়েছে।
এর ফলে কর্নাটকে সরকারি ক্ষেত্রে মোট সংরক্ষণের পরিমাণ ৫০ শতাংশের বেশি হয়ে গিয়েছে। এর ফলে জেনারেল কাস্টের পড়ুয়া ও চাকরিপ্রার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও দাবি উঠতে শুরু করেছে।
চাকরিতে অধিক সংরক্ষণের কারণ
এই সংরক্ষণের সীমা বৃদ্ধির পিছনে রাজনীতি মূল কারণ বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও কর্নাটক সরকার এই সিদ্ধান্তের স্বপক্ষে বিচারপতি নাগমোহন দাস কমিটির সুপারিশকে হাতিয়ার করেছে। তাদের দাবি, রাজ্যের তফশিলি জাতি ও উপজাতিদের জনসংখ্যার বিন্যাসের উপর ভিত্তি করে সংরক্ষণের সীমা বাড়ানোর সুপারিশ করেছিল নাগমোহন দাস কমিটি। তাঁরা সেটাই মেনে নিয়েছেন।
সরকারি ক্ষেত্রে সংরক্ষণ নিয়ে শুধু কর্নাটক নয়, প্রতিটি রাজ্যেই বলতে গেলে কমবেশি বিতর্ক আছে। গুজরাটে পতিদার সম্প্রদায়, রাজস্থানে গুজ্জর এমনকি এই বাংলায় কুড়মি সম্প্রদায় বারে বারে সংরক্ষণের সীমা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে। এই তো দুর্গাপুজোর ঠিক আগে কুড়মিদের আন্দোলনের জেরে ৬ দিন গোটা রাজ্য থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে ছিল ঝাড়গ্রাম জেলা। কুড়মিদের দাবি ছিল তাদের তফশিলি উপজাতির স্বীকৃতি দিতে হবে।
সংরক্ষনের বিরোধীতা
এদিকে দীর্ঘদিন ধরেই দেশে সংরক্ষণের বিরুদ্ধে সুর উঠছে। দেশবাসীর একটা বড় অংশের দাবি, জাতের ভিত্তিতে নয়, আর্থিক ক্ষমতার ভিত্তিতে সংরক্ষণ দেওয়া হোক। যদিও কোনও সরকার এখনও পর্যন্ত এই দাবির স্বপক্ষে পদক্ষেপ করেনি।
কর্নাটক সরকারের এই সংরক্ষণের উর্দ্ধসীমা বৃদ্ধি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি মোট সংরক্ষণের পরিমাণ ৫০ শতাংশ পেরিয়ে যাওয়ায় আদৌ তা শেষ পর্যন্ত প্রয়োগ করা যাবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও কর্নাটক সরকারের দাবি, বিশেষ পরিস্থিতিতে সংরক্ষণের অঙ্ক ৫০ শতাংশের বেশি হতে পারে। এক্ষেত্রে তারা তামিলনাড়ুর উদাহরণ দিয়েছে। দক্ষিণের এই রাজ্যটিতে মোট সংরক্ষণের পরিমাণ ৬৯ শতাংশ বলে কর্নাটক সরকারের দাবি।
👍 প্রতিদিন চাকরির আপডেট মিস করতে না চাইলে আমাদের ‘টেলিগ্রাম চ্যানেলে’ যুক্ত হয়ে যান
🔥 আরো চাকরির আপডেট 👇👇
🎯 WBCS চাকরি ছেড়ে বর্তমানে হাইকোর্টের বিচারপতি হয়েছেন এই লোক
🎯 রাজ্যের SSC গ্রুপ-সি চাকরি দুর্নীতিতে ৩৮১ জনকে জেলে ভরবে CBI
🎯 রাজ্যে প্রাইমারি শিক্ষকদের চাকরির শুরুতে বেতন কত?