রাজ্যের প্রায় সাড়ে এগারো হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া একেবারে শেষ পর্বে এসে পৌঁছেছে। হয়তো আর কয়েক দিনের মধ্যেই নিয়োগ প্রাপ্তদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হয়ে যেত। কারণ ইন্টারভিউ পর্ব শেষ হয়েছে। ঠিক এই সময়ই চাকরিপ্রার্থীদের জন্য এল বড় দুঃসংবাদ।
এক্ষুণি প্রাথমিক শিক্ষক পদে কোনও নিয়োগ হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। শুক্রবার এই সাড়ে এগারো হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, এই বিষয়ে পরবর্তী নির্দেশনা দেওয়া পর্যন্ত গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে থাকবে।
11 হাজার প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগের উপর সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ
গতবছর দুর্গাপুজোর আগে টেট পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তির সঙ্গেই প্রকাশিত হয়েছিল প্রায় সাড়ে এগারো হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি। তারপর ধাপে ধাপে চাকরিপ্রার্থীদের আবেদন পর্ব মিটিয়ে চলতি বছর শুরু হয় ইন্টারভিউ পর্ব।
সদ্য শেষ হয়েছে জেলাওয়াড়ি চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সূত্রে খবর, প্রায় ৪০ হাজার চাকরিপ্রার্থী আবেদন করেছিলেন। অগস্ট মাসের মধ্যেই চূড়ান্ত নিয়োগপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল পর্ষদ সূত্রে। কিন্তু সেই সব কিছুই থমকে গেল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে।
ফলে এক্ষুণি চূড়ান্ত নিয়োগপ্রাপ্তদের কোনও তালিকাও বের হচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবেই এটা রাজ্যের চাকরিপ্রার্থী শিক্ষকদের কাছে এক বড় ধাক্কা। কারণ নিয়োগ দুর্নীতির কারণে দীর্ঘদিন ধরেই এমনিতেই রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ থমকে ছিল। ফের আদালতের হস্তক্ষেপে থমকে গেল নিয়োগ প্রক্রিয়া।
প্রাইমারি নিয়োগের উপর স্থগিতাদেশ হওয়ার কারন
অবশ্য এই সাড়ে এগারো হাজার শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে প্রথম থেকেই প্রশ্ন উঠেছে। পর্ষদের বিজ্ঞপ্তিকে কেন্দ্র করে বারবার আদালতে গিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। সবচেয়ে বড় বিতর্ক তৈরি হয় ডিএলএড-দের পাশাপাশি ডিএড-রা এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন কিনা সেই নিয়ে।
এই বিতর্ক মিটতে না মিটতেই যারা ২০-২২ শিক্ষাবর্ষে ডিএলএড পড়ছেন তাঁরা এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন কিনা সেটা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। বিষয়টি গড়ায় কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এই সংক্রান্ত মামলা উঠেছিল। সেখানে মামলাকারীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ডিএলএড-এর চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা হতে দেরি হচ্ছে। তাই পাঠরতদেরও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক। সেই আর্জি মেনে নিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, যারা ২০-২২ শিক্ষাবর্ষের ডিএলএড পড়ছেন তাঁরাও এই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেন। বিচারপতি তালুকদার সিঙ্গেল বেঞ্চের রায় খারিজ করে দেন। তিনি নির্দেশ দেন, যারা D.El.Ed পাশ করে গিয়েছে তাঁরাই একমাত্র এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন।
এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টেরষ মামলা হয়। সেই মামলাতেই বিচারপতি হিমা কুহেলি ও বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে। সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, এই নিয়ে চূড়ান্ত বিচার ও রায়দান পরে হবে। যতক্ষণ না তা হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখতে হবে।
বিঃদ্রঃ চাকরি এবং নতুন কোনো নিয়োগের আপডেট, কর্মসংস্থান আপডেট মিস করতে না চাইলে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জয়েন হয়ে যান।
এগুলিও পড়ুন 👇👇
- ৬,৫০০ শূন্যপদে রাজ্যে স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ
- রাজ্যে পৌরসভায় চাকরির বিজ্ঞপ্তি জারি হলো
- ভারতীয় বায়ু সেনাবাহিনীতে অগ্নিবীর বায়ু পদে চাকরি
- মাধ্যমিক পাশে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় বিভাগে প্রচুর সংখ্যক পদে চাকরি