এসএসসি দুর্নীতিতে যাতে কারোর চাকরি না যায় তার জন্য অতিরিক্ত পদও তৈরি করতে প্রস্তুত রাজ্য সরকার, মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এর জন্য এসএসসির অধীনেই প্রায় ১৫,০০০ পদ তৈরি করতে রাজ্য মন্ত্রিসভা সম্মত হয়েছে বলেও তিনি জানান। একইসঙ্গে আদালতের প্রতি আস্থা রেখে শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, “আদালত যদি বলে তবে ব্যতিক্রমী পথে চাকরি পাওয়াদের বরখাস্ত করতেও রাজি আছে রাজ্য।”
এসএসসির গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের মধ্য দিয়ে এরাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রে তোলপাড় শুরু হয়। পরে শিক্ষক নিয়োগেও বিপুল বেআইনি নিয়োগের অভিযোগ ওঠে। অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ, যোগ্যদের বঞ্চিত করার মতো ঘটনার ঘনঘটা দেখে কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেই ঘটনাক্রমের পরিপ্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করলেন ব্রাত্য বসু।
SSC দুর্নীতিতে CBI তদন্তের প্রভাব কতটা পড়েছে?
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে এসএসসির গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগ ও মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করছে সিবিআই। ইতিমধ্যেই তাদের তদন্ত রিপোর্ট দেখে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি এর বেশ কিছু কর্মীকে বেআইনি নিয়োগের কারণে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেইসঙ্গে তদন্তের গতিপ্রকৃতি দেখে বিচারপতি সম্প্রতি জানিয়েছেন, নিয়োগ দুর্নীতির কারণে প্রায় ১৩ হাজার শিক্ষকের চাকরি যেতে পারে!
এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষকের চাকরি গেলে তা ভারতবর্ষের ইতিহাসে নজির তৈরি করবে। পাশাপাশি এই ঘটনার সামাজিক ও রাজনৈতিক অভিঘাতও যথেষ্ট হবে বলে বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা। এই পরিস্থিতিতে কার্যত বাধ্য হয়ে রাজ্য সরকার নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজ্য সরকার চাইছে না কারো চাকরি যাক?
মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী চান না কারোর চাকরি যাক। যোগ্য-অযোগ্য কেউ কাজ হারাক আমাদের সরকার চায় না। তাই ব্যতিক্রমী নিয়োগ যাদের হয়েছে তাঁদের বরখাস্ত করতে চাই না আমরা।সেই সঙ্গে মেধাতালিকা মেনে যোগ্যরাও কাজ পান আমরা চাই। তাই যোগ্যদের নিয়োগ করতে আমরা অতিরিক্ত পদ তৈরি করছি।”
ব্যতিক্রমী কারা?
শিক্ষা মন্ত্রী ব্যতিক্রমী নিয়োগ বলতে নিয়মবহির্ভূতভাবে বা বেআইনি পথে যাঁরা এসএসসির চাকরি পেয়েছেন তাঁদের কথা বলতে চেয়েছেন। ব্রাত্য বসু এরই সঙ্গে বলেন, “আদালত যদি ব্যতিক্রমী নিয়োগপ্রাপ্তদের বরখাস্ত করতে বলে, সেই নির্দেশও আমরা মেনে নিতে প্রস্তুত।
বেআইনি নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরিতে বহাল রেখেই যোগ্যদের নিয়োগ করার জন্য রাজ্য সরকার ১৪,৯১৬ টি নতুন পদ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও ব্রাত্য জানান। এরমধ্যেই ৫,২০০ নতুন পদ তৈরি হয়ে গিয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। সেই সঙ্গে চাকরির দাবি আন্দোলন করে চলা যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের কাছে আন্দোলন প্রত্যাহারের আর্জিও রেখেছেন তিনি। সরকার উপর আস্থা রাখার আবেদনও জানান।
তবে শিক্ষামন্ত্রীর এই সাংবাদিক বৈঠকের পর কতগুলো প্রশ্ন উঠছে। আইন অনুযায়ী বেআইনি পথে কেউ নিযুক্ত হয়েছেন তা প্রমাণিত হলে তাঁর চাকরি যাওয়ার কথা। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই পথে হাঁটতে চাইছে না কেন? তবে কি ভোট রাজনীতি এর কারণ?
এদিকে, শিক্ষামন্ত্রীর আবেদন প্রত্যাহার করে আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা জানিয়েছেন, নিয়োগপত্র না পাওয়ায় পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন জারি থাকবে।
👍 আমাদের ‘টেলিগ্রাম চ্যানেলে’ যুক্ত হতে চাইলে নিচে ক্লিক করুন, এখানে সর্প্রথম আপডেট দেওয়া হয়।
🔥 আরো আপডেট 👇👇
🎯 ৭ নভেম্বরের মধ্যে চাকরি ছাড়তে হবে! বিচারপতির নির্দেশে বিপদ
🎯 ১ লাখ টাকা বেতনে কোলকাতা ইউনিভার্সিটিতে প্রফেসর পদে চাকরি
🎯 প্রাইমারি টেট পরীক্ষা ২০২২ এর বিজ্ঞপ্তি জারি হলো