Petrol Diesel Price 2023: ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন সেই সময় লিটার পিছু পেট্রলের দাম ছিল ৬১ টাকার আশেপাশে। কিন্তু বর্তমানে বেশিরভাগ রাজ্যেই পেট্রলের দাম সেঞ্চুরি পেরিয়ে গিয়েছে। ডিজেলের দাম সেঞ্চুরি পেরিয়েও একটু কমে বেশিরভাগ রাজ্যে ৯০ এর ঘরে দাঁড়িয়ে আছে। অর্থাৎ গত ৯ বছরে ভারতবর্ষে জালানির দাম বেড়েছে হু হু করে। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন এই জ্বালানির দামের ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধিই হল দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ার অন্যতম কারণ।
পেট্রোল-ডিজেলের দামের সঙ্গে দ্রব্যমূল্যের কী সম্পর্ক?
1/7: বর্তমান আধুনিক বিশ্বে জ্বালানির দামের সঙ্গে দ্রব্যমূল্যের সম্পর্ক অতি ঘনিষ্ঠ। কারণ যে কোনও জিনিস উৎপাদনের পর তা বাজারে পৌঁছে দেওয়ার জন্য যানবাহনের প্রয়োজন হয়। আর সেই যানবাহন চলে জ্বালানির মাধ্যমে। ফলে জ্বালানির দাম বাড়লে পরিবহণ খরচ বাড়বে। আর সেই প্রভাবেই বাড়বে জিনিসপত্রের দাম। সমস্ত কিছু উৎপাদনের ক্ষেত্রেও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জ্বালানি কাজে লাগে। যেমন অনেকেই ভাবেন, ফসল উৎপাদনের কাজে জ্বালানি অতটা ব্যবহৃত হয় না। কিন্তু জমিতে জল সেচের জন্য, ট্রাক্টরের মাধ্যমে জমি কর্ষণ করা বা ফসল তোলার পর মেশিনের মাধ্যমে সেই ফসল ঝাড়াইয়ের কাজে জ্বালানির প্রত্যক্ষ ভূমিকা আছে। এইসব ক্ষেত্রেই ডিজেলের সাহায্যে মেশিন চালানো হয়।
2/7: আর এর বাইরে এফএমসিজি (FMCG) ক্ষেত্রে কারখানায় যে সমস্ত জিনিস তৈরি হয় সেখানে মেশিনপত্র চালাতে ডিজেল বা বিদ্যুৎ, কোনও একটা জ্বালানি অবশ্যই ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ যে কোনও দ্রব্য উৎপাদন ও তা বাজারজাত হওয়ার ক্ষেত্রে জ্বালানির এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।
3/7: কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার জ্বালানির উপর থেকে ভর্তুকি তুলে দেওয়ায় ভারতবর্ষে পেট্রল, ডিজেল ও গ্যাসের দাম রকেট গতিতে বেড়ে চলেছে। এরফলে গরিব মানুষ তো বটেই, এমনকি মধ্যবিত্ত মানুষের পক্ষেও সংসার চালানো এক প্রকার দুঃসাধ্য কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই সঙ্গে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির ফলে বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়ে ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতির হারের যন্ত্রণা তো আছেই।
আরো আপডেট: ব্যাগ ছাড়াই যেতে হবে স্কুল, ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের জন্য চালু হলো নতুন নিয়ম
4/7: কিন্তু জালানির এই ব্যাপক দাম বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রের ভর্তুকি কমিয়ে দেওয়া একমাত্র কারণ নয়। কেন্দ্রীয় সরকার তাদের বাৎসরিক রাজস্ব আয়ের একটা মোটা অঙ্ক পেট্রল, ডিজেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের উপর কর চাপিয়ে আদায় করে থাকে। পৃথিবীর অন্যান্য বহু দেশের তুলনায় ভারতবর্ষে জ্বালানির উপর কেন্দ্রীয় করের হার অত্যন্ত বেশি। গত দু’বছর ধরে দেখা গিয়েছে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম একেবারে তলানিতে গিয়ে পৌঁছলেও তার সুফল পায়নি ভারতের মানুষ। কারণ কোষাগারের ঘাটতি মেটাতে কেন্দ্রীয় সরকার জ্বালানির উপর কর ও সেস চাপিয়ে নিজেদের পকেট ভরিয়েছে। কিন্তু তাতে আমজনতা স্বস্তির বদলে যন্ত্রণা আরও বেড়েছে।
5/7: তবে এই জ্বালানির দাম নিয়ে আগামী এক বছরের জন্য সুখবর কিছু শোনানো সম্ভব নয়। কারণ ১ ফেব্রুয়ারি সংসদে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন (Nirmala Sitharaman) বাজেট পেশের পর জ্বালানির দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা আরও বৃদ্ধি পেল বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। এবারের বাজেটে জ্বালানি খাতে ভর্তুকি প্রদানের পরিমাণ গত বছরের থেকে আরও অনেকটা কমিয়ে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বাজেটে ১৫ লক্ষ কোটি টাকার বিপুল ঘাটতি দেখিয়েছেন তিনি। অর্থনীতিবিদদের একাংশের ধারণা, এই বিপুল বাজেট ঘাটতির একটা বড় অংশ মাঝপথে জ্বালানির উপর সেস বাড়িয়ে আদায় করার চেষ্টা করতে পারে কেন্দ্র।
6/7: জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পিছনে শুধু কেন্দ্র নয়, রাজ্য সরকারগুলির অবদানও যথেষ্ট। রাজ্যগুলি নিজেদের কোষাগার ভরতে পেট্রল, ডিজেল ও গ্যাসের উপর মোটা কর চাপিয়ে রাখে। মাস কয়েক আগে সাধারণ মানুষকে শাস্তি দিতে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বেশ কিছু রাজ্য জ্বালানির উপর তাদের করের হার কমালেও পশ্চিমবঙ্গের মানুষ সেই সুফলটুকুও বিশেষ একটা পায়নি। কলকাতায় যখন এক লিটার পেট্রলের দাম ১০৬.০৩ টাকা ও এক লিটার ডিজেলের দাম ৯২.৭৬ টাকা, তখন দিল্লিতে পেট্রল পাওয়া যাচ্ছে ৯৬.৭২ টাকা ও ডিজেল পাওয়া যাচ্ছে ৮৯.৬২ টাকায়।
7/7: দেশের দুই রাজ্যে জ্বালানির দামের এই পার্থক্যের কারণ হল রাজ্যের কর। সব মিলিয়ে একটা বিষয় পরিষ্কার ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষেও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি এবং সেই কারণে অন্যান্য দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির যন্ত্রণা একই রকম ভাবে সহ্য করতে হবে ভারতের মানুষকে। এ ক্ষেত্রে সরকার মোটেও সাধারণ মানুষের সমব্যথী হল না।
বি:দ্র: প্রতিদিন নতুন কোনো চাকরি এবং কাজের আপডেট সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আপডেট মিস করতে না চাইলে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হয়ে থাকুন।
🔥 গুরুত্বপূর্ণ লিংক: 👇👇👇👇
✅ কাজকর্ম WhatsApp গ্রুপ | Join Now |
✅ Telegram Channel | Join Now |
🔥 আরো গুরুত্বপূর্ণ আপডেট-Click Here