শিক্ষামন্ত্রীর প্রস্তাব খারিজ করে এসএসসি দুর্নীতি (SSC Scam) মামলায় কড়া নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এর ফলে আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে এসএসসির মাধ্যমে বেআইনিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীরা কাজ থেকে স্বেচ্ছায় সরে না দাঁড়ালে তাঁদের জীবনে চরম বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের প্রস্তাবকে সটান খারিজ করে দিয়ে বিচারপতি জানিয়েছেন, দুর্নীতির প্রশ্নে বিন্দুমাত্র নরম মনোভাব দেখাবেন না তিনি।
রাজ্য সরকারের কোন প্রস্তাব খারিজ হল?
মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন, এসএসসিতে ব্যতিক্রমী নিয়োগ প্রাপ্তদের চাকরিতে রেখে দিয়েই বঞ্চিতদের নিয়োগ করতে চায় রাজ্য সরকার। তার জন্য ৫,২৬১ টি শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর নতুন পদ তৈরি করা হবে।
এক্ষেত্রে যারা ঘুষ এবং মেধাতালিকা টপকে বেআইনিভাবে নিযুক্ত হয়েছেন, তাঁদেরকেই ব্যতিক্রমী নিয়োগ বলতে চেয়েছেন ব্রাত্য। শিক্ষামন্ত্রী এই প্রসঙ্গে বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান না কারোর চাকরি যাক। কারণ একজনের চাকরি যাওয়া মানে শুধু তিনি নয়, তাঁর পরিবারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
কিন্তু বুধবার এসএসসি সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে শিক্ষা মন্ত্রীর এই প্রস্তাব পুরোপুরি নাকোচ করে দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, যারা বেআইনিভাবে নিযুক্ত হয়েছে তাদের প্রতি কোনওরকম নরম মনোভাব দেখানো চলবে না। তাদেরকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করতেই হবে। এরপরই দিন বেঁধে দিয়ে অভিযুক্ত সরকারি কর্মীদের উদ্দেশ্যে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দেন বিচারপতি।
৭ নভেম্বর এর মধ্যে চাকরি ছাড়তে হবে?
বুধবার এসএসসি মামলার শুনানিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এসএসসির মাধ্যমে বেআইনিভাবে চাকরিতে নিযুক্ত হওয়াদের আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এই প্রসঙ্গে বিচারপতি বলেন, যারা অন্যায়ভাবে চাকরি পেয়েছে তারা নিজেরা ছেড়ে চলে যাক। ৭ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হল। এর মধ্যে অভিযুক্তরা স্বেচ্ছায় ইস্তফা না দিলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান বিচারপতি।
ঘুষের চাকরি না ছাড়লে অন্য সরকারি চাকরির রাস্তা বন্ধের হুশিয়ারি
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, সময়ের মধ্যে ইস্তফা না দিলে অপরাধ প্রমাণের পর তাদের বরখাস্ত করা হবে। সেইসঙ্গে আর যাতে কোনও সরকারি চাকরি পেতে না পারে, তার ব্যবস্থাও আদালত করবে বলে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়ে দেন।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নির্দেশের পর এসএসসির গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি পদের অশিক্ষক কর্মী এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক পদে যারা বেআইনিভাবে নিযুক্ত হয়েছেন তাদের চাকরি ধরে রাখার শেষ আশাটাও চলে গেল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
এদিকে বুধবার আদালতে সিবিআই চারটে রিপোর্ট জমা দেয়। তাতে এসএসসির মেধাতালিকায় কীভাবে কারচুপি করা হয়েছিল তা বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। সেই রিপোর্টে আছে, পরীক্ষায় সাদা খাতা জমা দিয়েও কেউ কেউ ৫৩, কেউ আবার ৬০ নম্বর পেয়ে গিয়েছেন!
এখানেই শেষ নয়, এরা বাকিদের টপকে মেধাতালিকায় উপরে উঠে এসে চাকরিও করছেন। এমনকি এসএসসির সার্ভারেও জালিয়াতি করা হয়েছে বলে সিবিআইয়ের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এই রিপোর্ট দেখে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আই অ্যাম শকড!”
👍 আমাদের ‘টেলিগ্রাম চ্যানেলে’ যুক্ত হতে চাইলে নিচে ক্লিক করুন, এখানে সর্প্রথম আপডেট দেওয়া হয়।
🔥 আরো আপডেট 👇👇
🎯 শিয়ালদহ, হাওড়া সহ বিভিন্ন রেলওয়ে ডিভিশনের নিয়োগ
🎯 পশ্চিমবঙ্গ প্রাইমারি টেট পরীক্ষার বই এর লিস্ট
🎯 ১১ ডিসেম্বর হচ্ছে টেট পরীক্ষা-কারা পরীক্ষায় বসতে পারবে?