প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মানিক ভট্টাচার্য গ্রেফতার হয়েছেন। সোমবার বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে টানা জেরা করা হয়। কিন্তু জেরায় অসহযোগিতা করা, একের পর এক বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে তদন্তকে ভুল পথে চালিত করার চেষ্টা সহ একাধিক অভিযোগ এনে ঠিক রাত একটার সময় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের এই প্রাক্তন সভাপতিকে তারা গ্রেফতার করেছে বলে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED) এর পক্ষ থেকে জানানো হয়। মঙ্গলবার সকালে সকলে মানিকের গ্রেফতারির কথা জানতে পারে।
মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ কী?
শিক্ষক দুর্নীতি মামলা কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই (CBI) তদন্তভার হাতে নেয়। তাদের তদন্ত প্রক্রিয়া কিছুটা এগোনোর পরই বিপুল আর্থিক লেনদেনের হদিস পেয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন ইডিও তদন্ত শুরু করে। এরাই গত ২৩ জুলাই প্রথম শিক্ষা দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে। ওই একই দিনে ইডির একটি দল মানিক ভট্টাচার্যর বাড়িতেও হানা দিয়েছিল।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নামে ইডির দেওয়া চার্জশিটে শিক্ষা দুর্নীতি মামলায় মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। ইডি তাদের চার্জশিটে উল্লেখ করেছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ফোনে এক ব্যক্তির এসএমএস পাওয়া গিয়েছে যাতে তিনি লিখেছিলেন, “মানিক বাজেভাবে টাকা নিচ্ছে, বিষয়টি একটু দেখুন!”
যদিও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সবটা জানা সত্ত্বেও তৎকালীন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেননি।
এছাড়াও মানিক ভট্টাচার্যর সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল তার প্রমাণও পেয়েছে ইডি। একটি সুত্রের দাবি, নদিয়ার পলাশীপাড়া কেন্দ্রে তৃণমূল বিধায়ক মানিক প্রকাশ্যেই বলতেন, তৃণমূল করলে তবেই ছেলে-মেয়েরা চাকরি পাবে! বিরোধীদের দাবি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যে বিপুল দুর্নীতি হয়েছে তার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড এই মানিক। তাঁর ছকে দেওয়া পথেই চলেছেন পার্থ, কল্যাণময়, সুবীরেশরা।
সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েও রেহাই পেলেন না মানিক
তবে মাসখানেক আগে থেকে মানিক ভট্টাচার্য যে কোনও মুহূর্তে গ্রেফতার হবেন এমন একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করতে পারে এমন সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি ছিল। এমনকি সিবিআইয়েরর গ্রেফতারি এড়াতে প্রথমে কলকাতা হাইকোর্ট ও পরে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন মানিক।
সেখানে প্রথমে দু’দিন ও পরে ১০ দিনের রক্ষাকবচও পান। যদিও সিপিএমের রাজ্যসভা সাংসদ তথা বর্ষিয়ান আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের দাবি, “সর্বোচ্চ আদালত মানিককে সিবিআই গ্রেফতার করতে পারবে না বলে নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু ইডির গ্রেফতারি নিয়ে কিছু বলেনি।” তাছাড়া সোমবার মানিকের গ্রেফতারির উপর স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
এছাড়াও কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদ থেকে মানিক ভট্টাচার্যকে সরিয়ে দেওয়া হয়। হাইকোর্টের এই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টেও গিয়েছেন মানিক।
সেই মামলা এখনও বিচারাধীন। যদিও আদালতের নির্দেশের পরই দেড়ি না করে গৌতম পালকে রাজ্য সরকার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নতুন সভাপতি নিযুক্ত করেছে। সেই তিনি মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে ২০১৪ ও ১৭ টেট পাশ সকলকে চাকরি দেওয়ার চেষ্টা করবেন বলে নতুন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
👍চাকরি ও কাজের আপডেট মিস না করতে চাইলে আমাদের ‘টেলিগ্রাম চ্যানেলে’ যুক্ত হয়ে যান
🔥 আরো চাকরির আপডেট 👇👇
🎯 ভারত পেট্রোলিয়ামে ট্রেনিং চলাকালীন ১৮ হাজার টাকা মাসিক
🎯 রাজ্যের হাই স্কুলের শিক্ষকদের শুরুতে বেতন কত?
🎯 লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে চাকরির মামলায় জড়িত সকলকে শাস্তির হুশিয়ারি